দোয়া কবুল হওয়ার কতিপয় শর্তসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
দোয়া কবুল হওয়ার কতিপয় শর্তসমূহ সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। আমরা অনেকেই আমল করি এবং আমলের পর দোয়া করে থাকি। দোয়া কবুল হওয়ার যে বিশেষ বিশেষ স্থান রয়েছে, দোয়া কবুল হওয়ার যে বিশেষ বিশেষ সময় রয়েছে সেই বিষয়ে আমরা অনেকেই জানিনা। এমন আরও কতিপয় বিষয় জানার জন্য লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।
এছাড়া আপনি আরও জানতে পারবেন, কোন কোন লোকের দোয়া কবুল হয়, দোয়া কবুল হওয়ার কতিপয় শর্ত কি কি, দোয়া শুরু করার নিয়ম কি, দোয়া শেষ করার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন।
ভূমিকা
দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম আদব হলো পাক পবিত্র হয়ে ক্বিবলামুখী হয়ে নামাযের হালতে বসে দোয়া করতে হবে। দোয়া করার শুরুতে এবং দোয়ার শেষে আমাদের প্রিয় নবী করিম (সাঃ) এর দরূদ পাঠ করতে হবে। যেকোন সময় দোয়া করা যায়, তবে কোন নেক আমল করার পর দোয়া করা উত্তম। যেমন-নামায পড়া, জিকির করা, দান-সদকা করা,
কুরআন তেলাওয়াত করা ইত্যাদি আমলের পর এরূপ ভাবে দোয়া করা যেতে পারে, "ইয়া আল্লাহ, আমি এই কাজটি শুধুমাত্র আপনার সন্তুষ্টির জন্য করেছি, এর বরকতে আর আপনার রহমতে আমাদের দোয়া কবুল করেন। দুই হাত উঠিয়ে কাকুতি-মিনতি করে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হয়। বেশি বেশি এই দোয়া করতে হয়,
আল্লাহ আমাকে জাহান্নামের কঠিন আযাব থেকে বাঁচিয়ে বিনা হিসাবে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করেন, দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যাণের জন্য দোয়া করতে হয়, নিজের পিতা-মাতার জন্য দোয়া করতে হয়, সকল মুসলমানের জন্য দোয়া করতে হয়।
দোয়া কবুল হওয়ার জন্য উপোযুক্ত স্থানসমূহ
দোয়া কবুল হওয়ার জন্য বিশেষ বিশেষ স্থানের গুরুত্ব অপরিসীম। দোয়া কবুল হওয়ার জন্য বিশেষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থানের মধ্যে মক্কা মুকাররমা এবং মদীনা মুনাওয়ারার গুরুত্ব সবচেয়ে অধিক। এর মধ্যে বিশেষ করে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর রওজা মুবারকের কাছে এবং মক্কা শরীফে বিভিন্ন স্থানে যেমনঃ তাওয়াফের স্থানে, হজরে আসওয়াদ এবং বায়তুল্লাহ শরীফের দরজার মধ্যবর্তী স্থানে,
কাবাগৃহের ছাদের পানির নালার নিচে এবং কাবাগৃহের ভিতরে। এছাড়াও যমযম কুয়ার কাছে, সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের উপরে, এই দুই পাহাড়ের মাঝে সাঈ করার সময়, মাকামে ইব্রাহিমের পিছনে, আরাফার ময়দানে, মুজদালিফাতে এবং মিনাতে শয়তানকে কংকর মারার স্থানে। তাহলে অবশ্যই আপনি জানতে পারলেন দোয়া কবুল হওয়ার কতিপয় আদবসমূহের মধ্যে বিশেষ বিশেষ যেসব স্থান রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেলেন।
আমরা আল্লাহ পাকের হুকুম সঠিক ভাবে আদায় করার চেষ্টা করবো এবং বেশি বেশি আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া করবো। কেননা আমলের পাশাপাশি দোয়া করলে সেই আমলের পরিপূর্ণ তৃপ্তি পাওয়া যায়। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে আমল করার এবং বিশেষ বিশেষ এই সব স্থানে গিয়ে দোয়া করার তাওফিক দান করুন, আমিন।
দোয়া কবুল হওয়ার উপোযুক্ত সময়
দোয়া কবুল হওয়ার জন্য বিশেষ বিশেষ স্থানের ন্যায় বিশেষ বিশেষ সময়েরও গুরুত্ব রয়েছে। এই সময় সম্পর্কে আমরা অবগত হয়ে যদি আমল করে আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া করি তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ পাক আমাদের দোয়া কবুল করবেন। মানুষ মানুষের কাছে বেশি বেশি চাইলে মানুষ বিরক্ত হয়ে যায়, আর আল্লাহ তায়ালার কাছে বান্দা যতবার চাইবে, যতকিছুই চাইবে,
আল্লাহ তায়ালা সঠিক সময়ে সবকিছুই দিয়ে দিবেন। আল্লাহ তায়ালার কাছে বান্দা না চাইলে, না দোয়া করলে আল্লাহ পাক মনক্ষুন্ন হয়ে যান। তাই আমাদের বেশি বেশি আমল করতে হবে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য আর পাশাপাশি সময়ের গুরুত্ব বুঝে আল্লাহ পাকের কাছে বেশি বেশি দোয়া করে চাইতে হবে। কেননা আল্লাহ পাকের অফুরন্ত ভান্ডার রয়েছে,
সেই ভান্ডার থেকে যা কিছুই দেন না কেন ভান্ডারের কোন কমতি হবেনা। দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো দোয়া কারীকে অবশ্যই হালাল রুজি খেতে হবে। হারাম খেয়ে দোয়া করলে সেই দোয়া কবুল হয়না। সেই বিষয়ে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে এবং মানতে হবে। মু'মিন বান্দা খাঁটি দিলে দোয়া করলে তা অবশ্যই আল্লাহ পাক কবুল করবেন। দোয়া কবুল হওয়ার যে বিশেষ সময় রয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হইলোঃ
- শবে ক্বদর অর্থাৎ মাহে রমজানের শেষ দশ দিনের বিজোড় রাত্রগুলিতে দোয়া করলে তা কবুল করা হয়।
- আরাফার দিনে অর্থাৎ যিলহজ্ব মাসের নয় তারিখে বান্দা দোয়া করলে তা আল্লাহ পাক কবুল করেন।
- পবিত্র মাহে রমজানের দিনে ও রাতে বান্দা আল্লাহর কাছে দোয়া করলে তা কবুল করেন।
- জিকিরের মজলিসে বান্দা দোয়া করলে তা আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন।
- প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর বান্দা দোয়া করলে সেই দোয়া আল্লাহ পাক কবুল করেন।
- নফল নামাজে সেজদাহ অবস্থায় দোয়া করলে আল্লাহ পাক তা কবুল করেন।
- জুমু'আর রাতে ও পূর্ণ দিনে, আসর থেকে মাগরীবের আগ মূহুর্তে এবং দুই খুৎবার মাঝখানে দোয়া করলে সেই দোয়া আল্লাহ পাক কবুল করে নেন।
- শেষ রাতে অর্থাৎ তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে দোয়া করলে তা আল্লাহ পাক কবুল করেন।
- কুরআন শরীফ তেলাওয়াতের পর, বিশেষ করে খতমের পর দোয়া করলে।
- যমযমের পানি পান করার সময় দোয়া করলে তা কবুল করা হয়।
- নামাজের ইকামত বলার সময় দোয়া কবুলের সময়।
- বৃষ্টিপাতের সময় দোয়া কবুলের সময়।
- সফরের সময় অর্থাৎ মুসাফির অবস্থায় দোয়া করলে সেই দোয়া আল্লাহ পাক কবুল করেন।
- যেকোন নেক কাজ করার পর দোয়া কবুলের অন্যতম সময়।
- মৃত্যুর সময় দোয়া কবুলের অন্যতম সময় এবং রোগাক্রান্ত অবস্থায় দোয়া করলে সেই দোয়া আল্লাহ পাক কবুল করে নেন।
কোন বান্দাদের দোয়া কবুল করা হয়
একনিষ্ঠভাবে এবং খাঁটি দিলে আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করলে তা অবশ্যই কবুল হওয়ার ব্যাপারে আশা করা যায়। কতইনা সৌভাগ্যবান সেইসব ব্যক্তি যাদের দোয়া আল্লাহ তায়লার দরবারে কবুল করা হয়। বান্দা যে দোয়া করবে তা অবশ্যই আল্লাহ তায়াল কবুল করে নেন, কিছু দোয়া দুনিয়াতে কবুল করা হয় আর কিছু দোয়া আখিরাতে কবুল করা হয়।
যেসব দোয়া দুনিয়াতে কবুল হয়নি সেইসব দোয়া যখন আখিরাতে কবুল হবে তখন বান্দা আফসোস করে বলবে, হায়! দুনিয়াতে আমার কোন দোয়া কবুল না হয়ে যদি সব দোয়া আখিরাতে কবুল করা হতো তাহলে কতইনা ভালো হতো। অথচ আমরা দুনিয়ার জন্য পেরেশানী হয়ে থাকি। দুনিয়ায় আমাদের জন্য যা বরাদ্দ আছে তা আমরা অবশ্যই পাবো, কিন্ত আখিরাত আমাদের আমল এবং দোয়ার মাধ্যমে সাজাইতে হবে। তাই আমাদের আমলের পাশাপাশি বেশি করে দোয়া করতে হবে। যে সকল বান্দাদের দোয়া কবুল করা হয়ঃ
- বিপদ্গ্রস্থ এবং পীড়িত লোকের দোয়া কবুল করা হয়।
- ন্যায় পরায়ন শাসকের দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করে নেন।
- যারা আল্লাহ তাআলার ওলী, তাদের দোয়া কবুল করা হয়।
- পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যব্যবহারকারী এবং সেবা শুশ্রুষাকারী সন্তান্দের দোয়া আল্লাহ পাক কবুল করে নেন।
- মুসাফির এবং আল্লাহর রাস্তায় সফরকারী বান্দাদের দোয়া আল্লাহতালা কবুল করে নেন।
- রোযাদারদের ইফতারীর সময় দোয়া কবুল করা হয়।
- এক মুসলমান অন্য মুসলমানের জন্য তার অনুপস্থিতে দোয়া করলে তা কবুল করা হয়।
- হজ্ব থেকে প্রত্যাবর্তনকারী হাজীদের দোয়া আল্লাহ্ তায়ালা কবুল করে নেন।
দোয়া কবুল হওয়ার শর্তসমূহ
দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত হলো দোয়াকারী ব্যক্তির ঈমান থাকতে হবে, পাক পবিত্র থাকতে হবে, ঈমান ছাড়া বান্দার দোয়া কবুল হয়না। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো দোয়াকারী ব্যক্তির উপার্জন অবশ্যই হালাল হতে হবে। কেননা হারাম উপার্জন করা বান্দাদের দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয়না। তাই এই বিষয়ে অবশ্যই আমাদের জানতে হবে,
আমরা যে ইনকাম করছি সেই ইনকাম আমার হালাল হচ্ছে নাকি হারাম হচ্ছে। আমাদের চাকরী, ব্যবসার টাকা, ক্ষেতে খামারে কাজ করার উপার্জন, রিকশা বা গাড়ী চালানো প্রভূতির ইনকাম অবশ্যই হালাল হতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে আমাদের উপার্জনের বিষয় নিয়ে। বর্তমান যামানায় হালাল ভাবে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে আমাদের জন্য।
হারাম থেকে বেঁচে হালাল পথে যাওয়ার বা জীবন-যাপন করার জন্য অবশ্যই আপনার দ্বীনি এলেম থাকতে হবে অথবা আলেমদের সহবতে থাকতে হবে এবং তাদের কাছ থেকে জেনে সেই অনুযায়ী আমল করতে হবে। তবেই আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। আপনি যদি কুরআন পড়তে পারেন তাহলে অর্থসহ পড়তে হবে এবং রাসূলের হাদীস পড়তে হবে।
যে ব্যক্তি এই দুইটাকে আকড়ে ধরে থাকবে সে পথভ্রষ্ট হবেনা। দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো দোয়াকারীকে এখলাসের সহিত দোয়া করতে হবে। সুন্নাত তরিকায় দোয়া করতে হবে এবং অবশ্যই দোয়াকারী ব্যক্তিকে শিরকমুক্ত হতে হবে।
দোয়া শুরু করার নিয়ম ও দোয়া শেষ করার নিয়ম
দোয়া শুরু করার উত্তম পন্থা হলো প্রথমে একবার ইস্তেগফার দোয়া পড়তে হবে। এরপর বিস্মিল্লাহ সহ সূরা ফাতিহা একবার পাঠ করতে হবে। বিস্মিল্লাহ্ সহ সূরা ইখলাস তিনবার পাঠ করতে হবে। আর পরিশেষে একবার দরূদে ইব্রাহিম পড়ে দোয়া শুরু করতে হবে। এভাবেও শুরু করা যেতে পারেঃ
উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা আন্তাস সালামু ওয়া মিনকাস সালামু তাবারাকতা ইয়া যাল জালালী ওয়াল ইক্বরাম।
যার অর্থ- হে আল্লাহ! তুমি শান্তিময় এবং তোমার থেকেই শান্তি। তুমি বরকতময় হে মহিমান্মিত ও সম্মানিত। ( মুসলিম ইবনে মাজাহ)
এছাড়া দোয়া শুরু করে শুরুতেই আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক নামসমূহের গুণকীর্তন করা, বেশি বেশি আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা বর্ণনা করা উত্তম। এমনভাবে প্রশংসা করতে হবে যেন আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হয়ে যান। কেননা আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করতে পারলে তারপর যা কিছু চাইবেন তা আল্লাহ তায়ালা দিয়ে দিবেন।
দোয়া শেষ করার নিয়ম বা কৌশলঃ প্রশংসা করে আল্লাহ তায়ালার দরবার থেকে চাওয়া শেষ হলে বাদোয়ার শেষের দিকে এই কথাটা বলা যেতে পারে-
উচ্চারণঃ সুবহানা রব্বিকা রব্বিল ঈযযাতি আম্মা ইয়াসিফুন-না, ওয়া সালামুন আ'লাল মুরসালিন। ওয়াল হামদুলিল্লাহি রব্বিল আ'লামিন। যার অর্থ--নিষ্কলুষ সত্তা! তিনি সম্মানিত এবং পবিত্র ঐ সকল কথা থেকে যা কাফিররা বলে থাকে এবং নবীদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক এবং সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব প্রতিপালক মহান আল্লাহ্ তায়ালার জন্য।
পরিশেষে এটা বলা যেতে পারে এবং দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো- হে আল্লাহ্, হুজুর পাক (সাঃ) এর তোফায়েলে আমাদের দোয়াকে কবুল আর মঞ্জর করে নেন। এরপর আমীন বলে দোয়া শেষ করতে হবে। ( মুনাজাত শেষ করে দুই হাত দ্বারা মুখমন্ডল মুছে নেওয়া) মিশকাত শরীফ- ১/১৯৫।
যেসব দোয়া করা নিষিদ্ধ এবং হারাম
এতোক্ষন আমরা দোয়া করার কতিপয় বিশেষ বিশেষ স্থান, বিশেষ বিশেষ সময় সম্পর্কে, দোয়া কবুল হওয়ার আদব সম্পর্কে, দোয়া কবুল হওয়ার শর্ত সম্পর্কে, দোয়া শুরু করার নিয়ম, দোয়া শেষ করার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতা পারলাম। এবার আমরা জানবো দোয়া করার নিষিদ্ধ কিছু বিষয় বা যেসব দোয়া করা নিষেধ রয়েছে এবং
যেসব দোয়া করা বা দোয়া চাওয়া ইসলামে হারাম করা হয়েছে। এই বিষয়ে আমাদের মুসলমানদের অবশ্যই জেনে রাখা দরকার। কারণ, যেকোন ভুলের কারনে আল্লাহ পাক আমাদের শাস্তি দিতে পারেন। যেসব দোয়া করা বা দোয়া চাওয়া হারাম এবং নিষিদ্ধ তা নিচে আলোচনা করা হইলোঃ
- মৃত কবরবাসীর কাছে কোন কিছু সাহায্য চাওয়া।
- মৃত্যু কামনা করা বা মৃত্যু চাওয়া।
- মৃত্যুর জন্য দোয়া করা।
- নিজে শাস্তি পাওয়ার জন্য দোয়া করা।
- অবাস্তব কোন জিনিসের জন্য দোয়া করা।
- অসম্ভব কোন কিছু পাওয়ার জন্য দোয়া করা।
- পাপ কাজের বিস্তার ঘটানোর জন্য দোয়া করা।
- আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া করা।
তাহলে নিশ্চয় জানতে পারলেন কোন কোন করা আমাদের জন্য নিষিদ্ধ এবং হারাম করা হয়েছে। এগুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই না জেনে অনেক বড় পাপ করে থাকি। আমাদের আশেপাশে লক্ষ্য করলে এমন পাপ করতে অনেক্যেই দেখা যায়। সুতরাং যারা এমন করবে তাদের বাধা দিতে হবে, তাদেরকে সঠিক ভাবে বোঝাতে হবে, এইসব পাপ কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে।
অনেক আহম্মককে দেখা যায় তারা বিভিন্ন মাজারে গিয়ে সিজদাহ করে, দোয়া করে। এটা যে কতবড় পাপ কাজ এবং ঘৃণিত কাজ তারা বোঝেইনা। আল্লাহ্ পাক আমাদের এইসব পাপ কাজ থেকে নিজদের হেফাজত করুণ এবং সবাইকে সঠিক দ্বীন বোঝার তাওফিক দান করুন, আমিন।
শেষ কথা এবং লেখকের মন্তব্য
আমরা উপোরোক্ত আলোচনা বা লেখাটি পড়ে জানতে পারলাম দোয়া কবুল হওয়ার শর্তসমূহ, দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ বিশেষ যে স্থানসমূহ রয়েছে, বিশেষ বিশেষ যে সময় রয়েছে সেই সম্পর্কে জ্ঞ্যানার্জন করতে। আরও জানতে পেরেছি কোন কোন বান্দারা দোয়া করলে তাদের দোয়া কবুল করা হয়না, কোন কোন দোয়া করা আমাদের জন্য নিষিদ্ধ এবং হারাম করা হয়েছে।
সুতরাং বুঝতেই পারলেন দোয়া করার গুরুত্ব কেমন, দোয়া করার বিশেষ সময়ে এবং বিশেষ কোন স্থানে দোয়া করলে কি ফজিলত তা অবশ্যই আমাদের জেনে আমল করা উত্তম। গুরুত্বপূর্ণ দোয়া গুলির মধ্যে পিতা-মাতার জন্য দোয়া অন্যতম। পিতা-মাতার জন্য যে দোয়াটি আমরা সবসময় করবো, সেটা হলো- রব্বির হামহুমা কামা রব্বা ইয়ানী স্বগীরা। দুনিয়া এবং আখিরাতের কল্যাণের জন্য দোয়া- রব্বানা আ'তীনা ফিদ্দুন ইয়া হাসানাতাঁও , ওয়াফিল আখিরাতে হাসানাতাঁও ওয়াক্বিনা আযাবান্নার।
আল্লাহ্ তায়ালার কাছে চাওয়ার অন্যতম হাতিয়ার হলো দোয়া করা। আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি হাসিল করার জন্য বেশি বেশি দোয়া করতে হবে। কবরের আযাব থেকে বাঁচার জন্য দোয়া করতে, দুনিয়ার পেরেশানী মুক্ত করার জন্য দোয়া করতে হবে, জান্নাত পাওয়ার জন্য দোয়া করতে হবে, জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করতে হবে, এমনকি যেকোন সমস্যার সমাধানে, যেকোন অবস্থায় আল্লাহ তায়লার কাছে চাইতে হবে, দোয়া করতে হবে। আল্লাহ পাক আমাদের সঠিক ভাবে, সঠিক পন্থায় দোয়া করার তৌফিক দান করেন, আমিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url