অধিক নেকী লাভের দোয়া ও আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
অধিক নেকী লাভের দোয়া এবং আমল সম্পর্কে আমাদেরকে জানতে হবে। আমরা অনেকেই কম বেশি বিভিন্ন দোয়া এবং আমল করে থাকি। আবার অনেকেই আমরা এইসব গুরুত্বপূর্ণ দোয়া এবং আমল সম্পর্কে জানিনা। দুনিয়ার অল্প জিন্দেগীর জন্য আমরা যে পরিমাণ চিন্তাভাবনা করে থাকি, কিন্ত অনন্ত কালের আখিরাত সম্পর্কে আমরা ততোটাই উদাসীন।
আখিরাতের উপর আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে, মাগফেরাতের জন্য দোয়া করতে হবে, জান্নাত লাভের জন্য বেশি বেশি দোয়া করতে হবে, জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করতে হবে, মিযানের পাল্লা ভারী হওয়ার দোয়া করতে হবে। এরূপ আরও গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে জানতে লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।
ভূমিকা
আমরা মুসলমান, আমরা না চাইতেই আল্লাহ পাক আমাদের দয়া করে, মহব্বত করে, ভালোবেসে ঈমানী দৌলত দান করেছেন। ঈমানী শক্তি কমবেশি সকল মুসলমানের রয়েছে, আমরা আমাদের আমলের দ্বারা ঈমানের মজবুত বা শক্তি বুঝতে পারি। যার ঈমান যত মজবুত, তার আমল ততো সুন্দর এবং দামী।
আমরা আমাদের আমলের দ্বারা আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন করে জান্নাতে যেতে চাই, জাহান্নামের কঠিন আযাব থেকে মুক্তি পেতে চাই। এই দুনিয়া খুব অল্প সময়ের জন্য আমাদের দেয়া হয়েছে, এই দুনিয়ায় কেউ চিরদিন বেঁচে থাকতে পারেনি এবং কেউ পারবেও না। একদিন না একদিন আমাদের এই দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে যেতে হবে, কিন্ত কে কখন যাবো এটা আমরা কেউ জানিনা।
মুসলমান হিসেবে, ঈমানদার ব্যক্তি হিসেবে সর্ব অবস্থায় আমাদের মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বলা হয়ে থাকে যে, সবচেয়ে বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে মৃত্যুর আগে তার সামানা প্রস্তত করে রাখে। মৃত্যুর সামানা হলো ঈমান আর আমল। দুনিয়ার জিন্দেগীতে আমরা যে রিজিকের জন্য পেরেশানী থাকি, সেই রিজিক আল্লাহ পাক আমাদের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন। দুনিয়ায় থেকে কে কেমন তার আখিরাত সুন্দর করে সাজাইতে পারে এটাই আমাদের জন্য পরীক্ষা।
সর্বদা আল্লাহ পাকের জিকিরের ফজিলত
জিকির অর্থ আল্লাহ পাকের স্বরণ। যারা বেহেশতবাসী হবে বা যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের প্রাপ্তির পূর্ণতা এতটাই বেশি হবে যে, তাদের আর কোন কিছু পাওয়ার জন্য আফসোস করা লাগবেনা। শুধুমাত্র সেই সময়ের জন্য বা সেই মুহুর্তের জন্য যে সময়টুকু দু'আ ও যিকির ব্যতিত অতিবাহিত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালার জিকিরে মশগুল থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম আমল।
আমরা তো সবাই চাই বেহেশতের মধ্যে বিচরণ করতে। যে ব্যক্তি বেহেশতের মধ্যে বা জান্নাতের মধ্যে বিচরণ করার ইচ্ছা করে বা পছন্দ করে তাহলে তার জন্য উত্তম আমল হচ্ছে বেশি বেশি আল্লাহ পাকের জিকির করা বা বেশি বেশি দু'আ করা। যে ব্যক্তি যতক্ষন পর্যন্ত আল্লাহ পাকের জিকির এবং দোয়া করতে থাকে, আল্লাহ পাক ততোক্ষন পর্যন্ত সেই বান্দার সাথেই থাকেন। যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহ পাকের জিকির এবং দোয়ার মধ্যে মশগুল থাকবে ঐ বান্দা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারবে।
এজন্য সর্ব অবস্থায় আল্লাহ পাকের জিকিরে মশগুল থাকা জরুরী। কেননা, যে দিলে জিকির থাকবে সেই জিন্দা, আর যে দিলে জিকির থাকবেনা সেই দিল মুর্দার সাথে তুলনা করা হয়েছে। যে ব্যক্তি জিকির করিতে করিতে তার জিহবা তরুতাজা রাখিবে সেই ব্যক্তি হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আমাদের প্রিয় নবী কারীম (সাঃ) অল্প সময়ে অসংখ্য নেকী অর্জন করার এবং আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ করার জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ মনে করিতেন।
মিযানের পাল্লা ভাড়ী করার আমল ও দোয়া
আমরা যারা মুসলমান, যারা আল্লাহ্ তায়ালার প্রতি ঈমান আনয়ন করেছি তারা অবশ্যই পরকালের উপর বিশ্বাস করি, হিসাব নিকাশের প্রতি বিশ্বাস করি। কিয়ামতের ময়দানে যেদিন হিসাব নেওয়া হবে, আমরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে পেরেশানির মধ্যে লিপ্ত থাকবো। মিযানের পাল্লায় আমাদের সারাজীবনের আমলের হিসাব করা হইবে।
সেইদিন যেই বান্দার নেকীর পাল্লা ভাড়ী হবে, সেই বান্দা জান্নাতি বলে ঘোষনা করা হবে। আর যে ব্যক্তির গুনাহের পাল্লা ভাড়ী হইবে সেই ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করিবে। সেইদিন কতইনা সৌভাগ্যবান হবে ঐ সকল বান্দারা, যাদের নেকীর পাল্লা ভাড়ী হইবে, তাদের আর কোন চিন্তা থাকবেনা। তাই কিয়ামতের দিন মিযানের পাল্লা ভাড়ী হওয়ার জন্য আমাদের দোয়া করতে হবে,
ফরজ নামাজের পাশাপাশি এই দোয়া ও আমল করতে পারলে আমাদের হিসাব সহজ হয়ে যাবে এবং নেকীর পাল্লা ভাড়ী হয়ে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো। মিযানের পাল্লা ভাড়ী করার নিম্নোক্ত দোয়াটি প্রতিদিন ১০০ বার করে পড়তে হবে। দোয়াটি হলোঃ সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী সুবহানাল্লাহিল আযীম।
যার অর্থ হইলোঃ আমি মহান আল্লাহ্ পাকের পবিত্রতা এবং তাহার প্রশংসা বর্ণনা করিতেছি। "হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন দু'টি কালেমা পাঠ করা অত্যন্ত সহজ, ওজনের পাল্লায় অনেক ভাড়ী, আর দয়াময় আল্লাহ তায়ালার নিকট অনেক প্রিয়।"(বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)
প্রতিদিন চারটি দামী তাসবীহ পাঠ করার ফজিলত
আমাদের দুনিয়ার জিন্দেগী ক্ষনস্থায়ী আর আখিরাতের জিন্দেগী দীর্ঘস্থায়ী। দুনিয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের পরকালের জিন্দেগীর পাথেয় বা সামানা জোগাড় করে নিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ পাক আমাদের এই দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন একমাত্র তার ইবাদত করার জন্য। কিন্ত আমরা আল্লাহ্কে ভুলে গিয়ে, শয়তানের ধোকায় পড়ে দুনিয়ার ধন-সম্পদ, ইজ্জত কামানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছি।
এসব ভুলে গিয়ে আমাদের আখিরাতের জন্য প্রস্ততি গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ্ পাকের যে হুকুম রয়েছে ফরজ সালাত করার সেগুলি আদায় করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের জান্নাতটা আরও সুসজ্জিত করার জন্য অনেক আমল করতে হবে। প্রতিদিন ফজরের পর এবং আসরের পর ১০০ বার করে 'সুবহানাল্লাহ', ১০০ বার করে 'আল-হামদুলিল্লাহ', ১০০ বার করে 'আল্লাহু আকবার', ১০০ বার করে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়িতে হইবে।
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে ও বিকালে সূর্যোদয়ের আগে ও সূর্যাস্তের আগে ১০০ বার 'সুবহানাল্লাহ' পড়িবে সে যেন একশতটি উট আল্লাহর ওয়াস্তে দান করিলো। যে ব্যক্তি এই দুই সময়ে ১০০ বার 'আলহামদুলিল্লাহ' বলিলো সে যেন আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য একশতটি ঘোড়ার পিঠে মুজাহিদ প্রেরণ করিলো।
আর যে ব্যক্তি এই দুই সময়ে ১০০ বার 'আল্লাহু আকবার' বলিলো ঐ দিনে তার চেয়ে বেশি আমল আর কেউ করিতে পারবেনা। আবার যে ব্যক্তি ১০০ বার 'লা- ইলাহ ইল্লাল্লাহু' পাঠ করিবে সে যেন ঈসমাইল (আঃ) এর বংশের একশত ব্যক্তিকে দাসত্ব থেকে মুক্তি প্রদান করিলো।
মুসলমানদের মাগফেরাতের জন্য দোয়ার ফজিলত
আমরা মুসলমান অপর মুসলমান নর-নারীর জন্য দোয়া করিতে পারি। আমরা যখন একজন আরেকজনের জন্য দোয়া করতে থাকবো তখন আল্লাহ পাক আমাদের উপর সন্তুষ্ট থাকবেন। আমরা যা কিছুই করিনা কেন একমাত্র আল্লাহ পাকের রাজি খুশির জন্যই করবো। আল্লাহ পাক যদি আমাদের উপর সন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে দুনিয়া এবং আখিরাত আমাদের জন্য আর কোন চিন্তার কারন থাকবেনা।
মুসলমান ভাইয়ের সাথে দেখা হলে সালাম বিনিময় করবো, ভালো-মন্দ খোজ খবর নিবো, বিপদে পাশে থাকার চেষ্টা করবো, মুসলমান ভাইয়ের একরাম করার চেষ্টা করবো। এক মুসলমান ভাই অপর এক মুসলমান ভাইয়ের একরাম করার নিয়ত করে চেষ্টা করিলে দশ বছর মসজিদে বসে এত্তেকাফ করার সওয়াব পাওয়া যায়। আল্লাহ পাক আমাদের জন্য কত সহজ করে দিয়েছেন।
আমরা যদি জেনে বুঝে আমল করতে পারি তবেই আমাদের জন্য সহজ হবে। অল্প আমলেই আল্লাহ পাক আমাদের অধিক নেকী দান করে থাকেন। মুসলমানদের মাগফেরাতের জন্য যে দোয়াটি করতে হবে, উহা এই যেঃ আল্লাহুম্মাগফিরলী ওয়ালিল মু'মিনিনা ওয়াল মু'মিনাতি ওয়াল মুছলিমিনা ওয়াল মুছলিমাতি।
যার অর্থ হলোঃ আয় আল্লাহ! তুমি আমার এবং সকল মুমিন নর-নারীর ও সকল মুসলমান নর-নারীর সমস্ত গুনাহ মাফ করিয়া দাও। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে ব্যক্তি দিনে পঁচিশ অথাবা সাতাশবার মুমিন নর-নারীর মাগফেরাতের জন্য দোয়া করিবে সেই ব্যক্তি আল্লাহ পাকের নিকট ঐ সব "মুস্তাজাবুদ দাওয়াত" (যাহাদের দোয়া আল্লাহ পাকের নিকট কবুল হয়) লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে যাদের দোয়ার উসিলায় পৃথিবীবাসীদেরকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।
অধিক আমলকারী হওয়ার জন্য দোয়া
আমরা সবাই দুনিয়ার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত হয়ে থাকি। অথচ দুনিয়ার সবকিছুই আল্লাহ পাকের নির্ধারিত করে দেওয়া। কিন্ত আখিরাত কারো জন্য নির্ধারিত নয়, দুনিয়া থেকে আমরা যা কিছু আমল করতে পারবো, তারই ফল ভোগ করতে পারবো। তাই আমাদের মূল লক্ষ্য থাকতে হবে আখিরাত মুখী। কেননা আখিরাতের সুখই আসল সুখ এবং আখিরাতের দুঃখই আসল দুঃখ।
দুনিয়ার সুখ শান্তি একদিন না একদিন শেষ হয়ে যাবে, কিন্ত আখিরাত অনন্ত কালের জন্য। সুতরাং আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে আখিরাত নিয়ে, কে কেমন করে তার আখিরাতকে আমলের দ্বারা সাজাইতে পারে। আল্লাহ পাকের সবচেয়ে বড় হুকুম ফরজ নামাজ আদায় করা এবং পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন আমল করার মাধ্যমে আমরা আমাদের জান্নাতকে সাজাইতে পারি।
অধিক নেকী লাভ বা অধিক আমল কারী হওয়ার জন্য যে দোয়াটি পড়তে হবে তা হলোঃ "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীর"। যার অর্থঃ আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নাই, তিনি একক, তাহার কোন শরীক নাই। সমগ্র রাজত্ব এবং সকল প্রশংসা একমাত্র তাহারই জন্য এবং তিনি সর্ব শক্তিমান।
যে ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ বার করে এই দোয়াটি পাঠ করিবে সে দশটি গোলাম আজাদ করার নেকী পাবে এবং তার জন্য একশতটি নেকী লেখা হইবে এবং একশতটি গুনাহ মাফ করা হইবে এবং সেই ব্যক্তি ঐ দিনে শয়তান হতে নিরাপদে থাকবে। কোন ব্যক্তিই তার চেয়ে অধিক আমলকারী হবেনা একমাত্র ঐ ব্যক্তি ব্যতীত যে তার চেয়ে অধিক সংখায় এই আমল করিবে। (বোখারী)
জান্নাত লাভের গুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও আমল
আমরা সবাই জান্নাত লাভের প্রত্যাশা করি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের আশা করি। এজন্য যে আমাদের আমল করতে হবে এটা আমরা অনেকেই ভুলে যাই বা গুরুত্ব দিতে চাইনা। আল্লাহ পাক আমাদেরকে দুনিয়ায় কেন পাঠিয়েছেন, আমাদের কি করতে হবে, মারা গেলে আমরা কোথায় যাবো, সেখানে আমাদের জন্য কি হতে পারে।
এসব বিষয় নিয়ে আমাদের জানতে হবে এবং সে অনুযায়ী আমল করতে হবে। জান্নাত লাভের জন্য আমাদেরকে আল্লাহ পাকের ফরজ হুকুম গুলো সঠিকভাবে আদায় করতে হবে এবং আরও কিছু আমল করতে হবে। জান্নাত লাভের জন্য যে দোয়াটি সকাল-সন্ধ্যায় আমল করতে হবে, উহা এই যেঃ রাদীতু বিল্লাহি রব্বাঁও ওয়া বিল্ ইসলামী দিনাঁও ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যান।
যার অর্থঃ আমি আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন রূপে এবং মুহাম্মদ (সাঃ) কে নবী হিসেবে সন্তষ্টচিত্তে মেনে নিয়েছি। হযরত সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা এই দোয়াটি তিন বার করে পড়বে, আল্লাহ তায়ালার উপর অবধারিত হবে কিয়ামতের দিন তাকে (জান্নাত দানের মাধ্যমে) খুশি করা। ( তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ৩৩৮৯)।
জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তির দোয়া
আমরা বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন যায়গায় জাহান্নামের আযাবের কথা বা জাহান্নামের শাস্তির কথা জানতে পেরেছি। আমরা সবাই জাহান্নামের কঠিন আযাব থেকে রেহাই পেয়ে, মুক্তি পেয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে চাই। জাহান্নামের ভয় আমাদের অন্তরে পয়দা করতে হবে, আল্লাহ তায়ালার হুকুম সঠিক ভাবে আদায় করতে হবে হবে। রমজানে চারটি কাজ বেশি বেশি করতে বলা হয়েছে।
তার মধ্যে দুইটা কাজ যেটা না করে কোন উপায় নাই। সেই দুইটা হলো, একঃ জান্নাত পাওয়ার জন্য বেশি বেশি দোয়া করতে হবে আর দুইঃ জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করতে হবে। জাহান্নাম থেকে মুক্তির যে দোয়াটি সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ ফজর এবং মাগরীবের পর সাত বার করে পড়তে হবে। দোয়াটি হলোঃ আল্লা-হুম্মা আজিরনী মিনান না-র।
যার অর্থঃ "হে আল্লাহ, আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন"। হযরত মুসলিম ইবনে হারেস আত তামিযী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজর এবং মাগরীবের পর এই দোয়াটি সাত বার করে পাঠ করিবে সে যদি সেই দিনে বা রাতে মারা যায় তাহলে সে দোজখ থেকে মুক্তি পাবে। (মুসনাদে আহমাদ- ১৭৩৬২)।
প্রতিদিন এক লক্ষ চব্বিশ হাজার নেকীর দোয়া
আমল করলে মনে শান্তি পাওয়া যায়, অন্তরে তৃপ্তি পাওয়া যায়। আল্লাহ পাক বান্দাদের পাঠিয়েছেন শুধুমাত্র তারই ইবাদত করার জন্য, সুতরাং বান্দারা তার ইবাদত করবে এটাই তো স্বাভাবিক বিষয়। কিন্ত আমরা না বুঝে, নফসের ধোকায় পরে বিভিন্ন খারাপ কাজ করে থাকি, বিভিন্ন গুনাহ করে থাকি। যারা সব সময় আমলের সাথে থাকে, তারা ঠিকই আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি র্জন করার জন্য আল্লাহ পাকের ফরজ সালাতের সাথে আরও অনেক নেকীর কাজ করে থাকেন।
একটা ছোট্ট দোয়া যা আমল করলে কত নেকী লাভ করা যায়। যে ব্যক্তি নিচের এই দোয়াটি একশত বার পাঠ করিবে, তার জন্য এক লক্ষ চব্বিশ হাজার নেকী লেখা হবে। (মুসতাদরাকে হাকিম, খ-৪,পৃ-২৭৯, হাদীস- ৭৬৩৮)। যার উচ্চারণ-সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী। এর অর্থঃ আল্লাহর পবিত্রতা ও প্রশংসা ঘোষণা করছি। আল্লাহ পাক আমাদের বেশি বেশি নেক আমল করার তৌফিক দান করেন, আমিন।
শেষকথা ও লেখকের মন্তব্য
উপোরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে নিশ্চয় জানতে পেরেছেন যে, কিভাবে অল্প আমলের দ্বারা অধিক নেকী লাভ করা সম্ভব। শেষ যামানার উম্মতের হায়াতের জিন্দেগী কম হওয়ার কারনে অতি অল্প আমলে অধিক নেকী অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। আল্লাহ পাক আমাদের বিভিন্ন নিয়ামত দিয়ে এই দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। আল্লাহ পাকের এইসব নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে হবে। আল্লাহ পাক আমাদের এই দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন শুধুমাত্র তার ইবাদত করার জন্য।
আমরা যদি আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য তার প্রধান হুকুম ফরজ সালাত জামাতের সাথে আদায় করতে পারি, তবেই আমরা আরও যে দোয়া ও আমল রয়েছে তা আমরা বেশি বেশি আদায় করতে পারবো। আমরা যদি ফরজ নামাজ বাদ দিয়ে এইসব আমল করে থাকি তাহলে কোন ফায়দা নেই। আল্লাহ পাক আমাদের সঠিক বুঝার তৌফিক দান করুন এবং আমলের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে জান্নাতের যাওয়ার তৌফিক দান করুন, আমিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url