তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
তুলসি পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম এবং তুলসি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি যদি না জেনে থাকেন, তাহলে আজকের আলোচনাটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই। তুলসির পাতা বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসেবে দারূণ কার্যকরী। তাইতো অনেকের বাড়ির আঙিনায় তুলসির গাছ দেখা যায়। তুলসি পাতার কার্যকারিতা এবং উপকারিতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও তুলসি পাতা খালি পেটে খেলে কেমন উপকার হবে, বাচ্চাদের শর্দি কাশি দূর করতে তুলসি পাতার কার্যকারিতা কেমন, তুলসি পাতার ক্ষতিকর দিক বা অপকারিতা রয়েছে কিনা সে বিষয়ে জানার জন্য লেখাটি মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।
ভূমিকাঃ
আমাদের বাড়ির পাশে যে তুলসির গাছ দেখা যায়, এই তুলসি পাতা কত রোগের বা কত সমস্যার সমাধান হিসেবে কাজ করে তা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। সকালে খালি পেটে তুলসির পাতা খেলে কি কি উপকার পাওয়া যাবে, কিংবা তুলসি পাতার সাথে মধু মিশিয়ে খেলে কেমন উপকার পাওয়া যাবে সে বিষয়ে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন।
সঠিক তথ্য জেনে এবং সঠিক নিয়মে যেকোন কিছু খাওয়া হয় বা কাজ করা হয় তাহলে সেই কাজের এবং যে উদ্দেশ্যে খাওয়া হয় তা অবশ্যই ফলপ্রসু হবে। সুতরাং আমরা যা কিছু করবো বা যা কিছু খাবো অবশ্যই আমাদের সে সম্পর্কে জেনে বুঝে করতে হবে বা খেতে হবে তাহলেই সফলতা মিলবে।
সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা
আমরা অনেকেই জানি যে, এই তুলসি পাতা বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আগেকার মানুষেরা তুলসি পাতার গাছকে ঔষধী গাছ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এমনকি বর্তমান সময়েও যারা বয়স্ক মানুষ রয়েছে, তাদের পরামর্শ নিয়ে এই তুলসি পাতা বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে থাকে।
আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং শরীরের স্বাভাবিক ভারসাম্য বজায় রাখতে এই তুলসি পাতার রস ব্যপক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। সকালে তুলসি পাতা খাওয়ার যে উপকারিতা রয়েছে সে বিষয়ে নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
ওজন কমাতে তুলসি পাতার ভূমিকাঃ কারও শরীর যদি অতিরিক্ত মোটা হয়ে থাকে, শরীরের ওজন দ্রূত বৃদ্ধি পেতে থাকে, যার দ্বারা স্বাভাবিক চলাফেরার সমস্যা সৃষ্টি হয়, কোন কাজকর্ম করতে পারেনা, ঠিকমতো ঘুমাতে পারেনা, তাদের জন্য সঠিক পরামর্শ হলো নিয়মিত সকালে খালি পেটে তুলসি পাতার রস ব্লেন্ড করে নিয়ে খেতে পারলে আপনার শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে এবং শরীরের ওজন স্বাভাবিক আনতে কাজ করবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষ্মতা বৃদ্ধি করতে তুলসি পাতার উপকারিতাঃ আমাদের প্রায় সকলের কোন না রোগের সাথে যুদ্ধ করতে হয়, ছোট বড় রোগ সবারই দেখা যায়। এদের মধ্যে কারও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি আবার কারো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম। শরীরের কোন অংশে কেটে গেলে বা শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা অনুভব হলে অনেকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকার কারণে তারাতারি শুকিয়ে যায় বা ভালো হয়ে যায়। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাদের উচিৎ নিয়মিত সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার অভ্যাস করা।
পেট পরিষ্কার করতে তুলসি পাতার ভূমিকাঃ অনেকের বদ হজমের কারণে বা গ্যাস্টিকের সমস্যার কারণে পেট ফাপা হয়ে থাকে বা পেট ফুলে থাকে। যার কারণে অনেক সময় দেখা যায় তাদের পেট পরিষ্কার হয়না, যাদের এই ধরনের সমস্যা দেখা দিবে তাদের উচিৎ নিয়মিত সকালে খালি পেটে কয়েকদিন তুলসি পাতার রস করে খাওয়া। তাহলে দেখবেন আপনার পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে।
শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করতে তুলসি পাতার উপকারিতাঃ আমাদের আশেপাশে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অনেকের শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ দেখা যায়, কিংবা হাঁপানি সমস্যা দেখা যায় এমনকি কাশিতে কাশিতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা যায়, তাদের জন্য উত্তম ব্যবস্থা হচ্ছে নিয়ম করে কয়েকদিন সকালে খালি পেটে তুলসি পাতার রস খেতে পারলে এইসব সমস্যার সমাধান মিলবে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে তুলসি পাতার উপকারিতাঃ অনেকের দেখা যায় কথা বলার সময় মুখের দুর্গন্ধ বাহিরে বের হয়ে আসে, যেটা খুবই আপমান জনক। ভয়ের কোন কারন নেই, কেননা এই সমস্যার সমাধানে তুলসি পাতা চিবিয়ে খেতে পারলে অথবা তুলসি পাতার রস মাউথওয়াশের সাথে ব্যবহার করতে পারলে মুখের দুর্গন্ধ দূর করে দেবে এবং মুখের স্বাস্থ্যবিধি উন্নতি করতে সাহায্য করবে।
ব্রণ দূর করতে তুলসি পাতার উপকারিতাঃ মানুষের মুখমন্ডল হচ্ছে তার সৌন্দরয্যের প্রতীক। অনেকের দেখা যায় এই মুখমন্ডলে ব্রণের দাগের কারণে চেহারার সৌন্দর্য্য নষ্ট করে ফেলে। চিন্তার তেমন কোন কারন নেই, কেননা তার জন্য সঠিক সমাধানও রয়েছে।
মুখের ব্রণ দূর করতে তুলসি পাতা ব্যপক কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে তুলসি পাতা সুন্দর করে বেটে নিয়ে আপনার মুখে লাগিয়ে দিন, নিয়মিত কয়েকদিন লাগালেই দেখবেন মুখের ব্রণ দূর হয়ে চেহারার সৌন্দর্য ফিরে আসতে সাহায্য করবে।
মধু ও তুলসি পাতার কার্যকারিতা
মধু এবং তুলসি পাতা আলাদাভাবে হোক আর এককভাবে হোক এই দুইটার উপকারিতা এবং কার্যকারিতা অপরিহার্য। প্রাচীনকাল থেকেই ঐতিয্যগত ভাবে মধু এবং তুলসি পাতা বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এবং বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। মানবদেহের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে এবং শরীরের স্বাভাবিক তারতম্য ধরে রাখার জন্য মধু এবং তুলসি পাতার উপকারিতা অবিশ্বাস্য।
মধু এবং তুলসি পাতার কার্যকারিতা এবং উপকারিতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
- মধু এবং তুলসি পাতার মধ্যে এন্টঅক্সিডেন্ট রয়েছে এবং বিভিন্ন পুষ্টিগুণে গুনান্নিত রয়েছে। যার ফলে আপনার আপনার শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে আপনাকে সুস্থ্যতা দান করতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
- মধু এবং তুলসি পাতার রস করে একসাথে খেতে পারলে আপনার পুরাতন সর্দি, কাশি দূর করতে এবং এই সর্দি কাশির ফলে সৃষ্ট শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।
- যাদের নিয়মিত ঠান্ডা লেগে থাকে, এই ঠান্ডা থেকে আপনার শরীরকে রক্ষা করতে নিয়মিত কয়েকদিন তুলসি পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারলে ঠান্ডা দূর হয়ে যাবে, এমনকি আপনার শরীরকে নানা রকম ভাইরাসের হাত থেকেও রক্ষা করতে সাহায্য করবে।
- মধু এবং তুলসি পাতার রস একসাথে মিশিয়ে খেতে পারলে আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে এবং এলার্জি কমাইতেও সাহায্য করবে। কেননা, মধু এবং এই তুলসি পাতার মধ্যে এন্টিসেপটিক মতো উপাদান বিদ্যমান রয়েছে।
- অনেকের দেখা যায় কিডনিতে পাথর জমে যেতে দেখা যায়, যা অত্যন্ত ভয়ের এবং কষ্টের। তবে তাদের জন্য আর ভয়ের কোন কারন নেই। আপনি যদি নিয়মিত কয়েকদিন মধুর সাথে তুলসি পাতার রস মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে আপনার কিডনিতে থাকা বিষাক্ত এই পদার্থ ভ্যানিশ করে দিতে সাহায্য করবে এবং আপনার কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করবে।
- মধু এবং তুলসি পাতা একসাথে খাওয়ার ফলে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে, যার ফলে আপনার হ্রৎপিন্ডকে সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করবে।
তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতাগুলো
তুলসি পাতা খাওয়ার যে ব্যপক উপকারিতা রয়েছে তা আমাদের কারো অজানা নেই বললেই চলে। তবে তুলসি পাতা কখন, কিভাবে বা কিসের সাথে মিশিয়ে খেলে কি ধরনের উপকার মিলবে এই বিষয়ে আমরা অনেকি ধারণা রাখিনা। আদিকাল থেকেই তুলসি পাতার ব্যবহার মহৌষধ হিসেবে ব্যবহ্রত হয়ে আসছে।
তুলসি পাতায় এন্টিওক্সিডেন্ট উপাদান বিদ্যমান থাকায় অনেক জটিল এবং কঠিন রোগের নিরাময় হিসেবে কাজ করতে সাহায্য করে। যেমনঃ ক্যান্সার, হ্রদরোগ, ডায়াবেটিসের মতো মারত্বক এবং জটিল রোগ নিরাময় করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে।
সর্দি-কাশি দূর করতে তুলসি পাতার কার্যকারিতাঃ
সর্দি-কাশি দূর করতে তুলসি পাতার যে কার্যকারিতা রয়েছে বা উপকার রয়েছে তা আমাদের সবারই জানা। সর্দি এবং কাশি ভালো করতে তুলসি পাতার রস খুব তারাতারি ফলাফল পেতে সাহায্য করে। অনেকের বুকে কফ জমে যেতে দেখা যায়, এক্ষেত্রে উত্তম প্রতিকার হলো প্রতিদিন সকালে নিয়মিত তুলসি পাতার রসের সাথে আদা, চা পাতা মিক্স করে উত্তম ভাবে ফুটিয়ে তার সাথে সামান্য মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারলে অতি দ্রূতই আপনার সর্দি এবং কাশি দূর করে দিবে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে তুলসি পাতার উপকারিতাঃ
ক্যান্সারের নাম শুনলে বা কারও ক্যান্সার হলে আমরা সবাই জানি যে এটা একটা মরণব্যাধি রোগ। এই রোগ হলে বাঁচার আশংকা কমে যায়। তুলসি পাতার মধ্যে যে রেডিওপ্রটেকটিভ উপস্থিত রয়েছে যা আমাদের অনেকেরই অজানা। এই উপানাদের কারণে টিউমারের ক্ষতিকর কোষগুলোকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে।
এছাড়াও তুলসি পাতায় ফাইটোকেমিকেলের উপাদান হিসেবে রোসমারিনিক এসিড (Rosmarinic Acid), মাইরেটিনাল (Myretinal), লিউটিউনিল (Leutiunil), এবং এপিজেনিন (Epijenin) রয়েছে যার মাধ্যমে কান্সারের নিরাময় হিসেবে কাজ করতে সাহয্য করে। অগ্নাশয়ের যে টিউমার রয়েছে তা দূর করতে, এমুনকি ব্রেস্ট ক্যান্সারের নিরাময় হিসেবেও দারূণ উপকারী এই তুলসি পাতার রস।
গলার ব্যাথা দূর করতে তুলসি পাতার উপকারিতাঃ
আমারা অনেকেই গলার ব্যাথা অনুভব করে থাকি, যার জন্য আমরা ঠিকমতো কোন কিছু খেতে পারিনা। এই গলার ব্যাথা সাড়াতে তুলসি পাতার কার্যকারিতা অবিশ্বাস্য। যাদের শাসপ্রশ্বাসের ব্যাধি রয়েছে তাদের জন্যও তুলসি পাতা ব্যপক উপকারী। গলা ব্যাথা দূর করার উপায় হিসেবে কয়েকটি তুলসি পাতা নিয়ে গরম পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে সেই ফুটানো পানি দিয়ে গড়্গড় করতে পারলে আপনার গলার ব্যাথা দূর হয়ে যাবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষ্মতা বৃদ্ধি করতে তুলসি পাতার ভূমিকাঃ
যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু কম, শারীরিকভাবে যারা একটু দূর্বল, কোন যায়গায় কেটে গেলে, সাড়াতে অনেকদিন সময় ্লাগে, তাদের জন্য উত্তম ব্যবস্থা হলো এই তুলসি পাতার রস।এছাড়াও তুলসি পাতার অন্যতম কার্যকারিতার মধ্যে এজমা, ফুসফুস জনিত সমস্যা দূর করতে, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি সমস্যার সমাধানে কাজ করে থাকে।
জ্বর ভালো করতেও তুলসি পাতার ভূমিকা অত্যাবশ্যকীয়। তুলসি পাতার সাথে এলাচ মিশিয়ে গরম পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানি খেতে পারলে খুব সহজেই নানান রকম জটিল এবং কঠিন রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
ডায়াবেটিস দূর করতে তুলসি পাতার উপকারিতাঃ
আমরা অনেকেই জানিনা যে, ইনসুলিন উৎপাদনে তুলসি পাতা ব্যপক কাজ করে থাকে। প্রতিদিন নিয়মিত খাবারের আগে তুলসি পাতা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে রক্তে সুগারের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে তুলসি পাতা এন্টি ডায়াবেটিকের নিরাময় হিসেবে কাজ করতে সাহায্য করে।
বাচ্চাদের সর্দি-কাশি দূর করতে তুলসি পাতার ভূমিকা
ছোট বাচ্চাদের সর্দি এবং কাশি লেগেই থাকে। বাচ্চাদের অসুখ বিসুখ হলে পরিবারের সবারই মন খারাপ হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে দেখা যায় যেকোন আবহাওয়া পরিবর্তন হলে বা বিভিন্ন কারণে বাচ্চাদের ঠান্ডা লেগে যায়, সর্দি-কাশি দেখা যায়, জ্বর, গলাব্যাথা দেখা যায়। এইসব রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই আমরা প্রথমেই ডাক্তারের কাছে ছুটে যাই,
কিন্ত আমরা ভুলে যাই যে অতিরিক্ত ডাক্তারের ঔষধ বা এলোপ্যাথি সেবন করা বাচ্চাদের জন্য হুমকি সরুপ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। অতিরিক্ত ঔষধ সেবনের দ্বারা বাচ্চাদের শরীরে দূর্বলতা অনুভূতি লক্ষ্য করা যায়, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যেতে থাকে। আদিকালের মানুষেরা তাদের বাচ্চাদের এইসব সর্দি-কাশি, জ্বর, গলাব্যাথা দেখা দিলে তুলসি পাতার রসের সাথে গুঁড় মিশিয়ে বাচ্চাদের খাওয়াইতেন।
ফলে দেখা দিতো অল্প সময়ের বা অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বাচ্চারা সুস্থ্য হয়ে যেতো। তাই আমরা আমাদের বাচ্চাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় হিসেবে শুরুতেই ডাক্তারের কাছে না গিয়ে এইসব ভেসজ উপাদানের সাহায্যে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করবো।
তুলসি পাতার ক্ষতিকর দিক বা অপকারিতা
তুলসি পাতার উপকারিতার পর এবার একটু ক্ষতিকর দিক বা তুলসি পাতার অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করছি। কেননা যেকোন জিনিসের ভালোর দিকের পাশাপাশি কিছু খারাপ দিক বিদ্যমান থাকে। তবে খাবারের জিনিসের মধ্যে ক্ষতির দিক থেকে উপকারিতাই বেশি দেখা যায়। তবে একটা বিষয় আমাদের জেনে রাখা ভালো যে,
পরিমাণের অতিরিক্ত কিংবা নিয়মের বাইরে যা কিছু করিনা কেন তার ভালো দিক বা উপকারের চেয়ে ক্ষতি কিংবা অপকারিতাই বেশি লক্ষ্য করা যায়। অতিরিক্ত তুলসি পাতা খাওয়ার দরূন গর্ভাবস্তায় কিংবা স্তন্যপানের সময় বিভিন্ন সমস্যা বা জটিলতা প্রভাব ফেলতে দেখা যেতে পারে। এমনকি মাত্রারিরক্ত তুলসি পাতা খাওয়ার কারণে নারীদের বন্ধ্যাত্বের মতো ক্ষতিকর কারণ দেখা দিতে পারে।
আবার প্রয়োজনের বেশি মাত্রায় তুলসি পাতা সেবনের কারণে শরীরে রক্তের চাপ বেড়ে যাওয়ার আশংকা থাকতে পারে। যার দ্বারা শরীরের স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালনের ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে গর্ভাবস্তার সময় রক্তপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এরজন্য উত্তম সমাধান হলো সেজারের কমপক্ষে ১৫ দিন আগে থেকে তুলসি পাতা না খাওয়াই ভালো।
সর্বশেষ মন্তব্য
আমরা উপোরোক্ত লেখাটি পড়ে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছি এবং জানতে পেরেছি তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে, মধু এবং তুলসি পাতা মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা, বাচ্চাদের সর্দি-কাশি দূর করতে তুলসি পাতার ভূমিকা ইত্যাদি বিষয়ে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম। সুতরাং আমরা যারা নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে থাকি তাদের উচিৎ বাড়ির আঙিনায় তুলসি গাছ লাগিয়ে রাখা।
যাতে করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এদিক সেদিক খোজাখুজি করা না লাগে। আদিকালের মানুষেরা তাদের বাড়ির আঙিনায় তুলসি গাছ, নিম গাছের মতো এইসব ঔষধী গাছ লাগিয়া রাখতেন। আরেকটা বিষয়ে জেনে খুশি হবেন যে, আগেকার মানুষেরা কিন্ত তাদের কিংবা তাদের পরিবারের কারও অসুখ বিসুখ হলে শুরুতেই তারা ডাক্তারের কাছে যেতেন না। বিভিন্ন গাছ গাছালির পাতা, শেখর, কুশি এইসব জিনিসের দ্বারা চিকিৎসা সেবা নিতেন। তাই আমরাও কিন্ত আমাদের বাড়ির আঙিনায় তুলসির গাছ, নিম গাছের মতো ঔষধী গাছ লাগিয়ে রাখতে পারি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url